বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • গরুর দেশীয় জাত হারানোর বিনিময়ে আধুনিক জাত দরকার নাই
  • এনবিআর বিলুপ্তিতে কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই
  • চিকিৎসার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর সরকার
  • ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না
  • ২ জনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর জেল
  • পররাষ্ট্রসচিবসহ ৬ জনের সদস্যপদ স্থগিত করল অফিসার্স ক্লাব
  • চিকিৎসকদের জন্য সুখবর, বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব
  • সারাদেশে এনআইডি সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ
  • সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথমবার নিজ এলাকায় যাচ্ছেন ড. ইউনূস
  • শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ১৭ মে

ইবিতে পুরোনো বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে একাধিক সংগঠনের মানববন্ধন

রবিউল আলম , ইবি

প্রকাশিত:
৪ মার্চ ২০২৪, ১৫:০৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন বৈশাখী-মঞ্চ তৈরির নামে দুই যুগের পুরোনো তিনটি গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়ন, সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য এবং ডীপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনসার্ভেশন ফাউন্ডেশন। এছাড়াও সমর্থন ও প্রতিবাদ মিলে দুই পক্ষের সমালোচনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় ক্যাম্পাসজুড়ে।

সোমবার (৪ মার্চ) সকাল থেকে মানববন্ধন করেন বিভিন্ন সংগঠনগুলো। এসময় 'গাছ কেটে উন্নয়ন চাই না', 'নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ হোক', 'সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ হোক', 'গাছ লাগাও জীবন বাঁচাও, জীবন জ্যোতি সৃষ্টি টেকাও', 'লক্ষ গাছ লক্ষ প্রাণ', 'বাঁচাও প্রকৃতি বাঁচাও প্রাণ ' সহ নানা প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায় সংগঠনের সদস্যদের।

এসময় ডীপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনসার্ভেশন ফাউন্ডেশন এর টীম লিডার আরাবী আঁখি বলেন, একটা গাছ বড় হতে বছরের পর বছর সময় লাগে, অথচ আমাদের এই তিনটি গাছের বয়স প্রায় ২৪ বছর। উন্নয়নের নামে এই গাছ কেটেছে আমাদের প্রশাসন। তবে তা কতটা উন্নয়ন বয়ে আনছে? আমাদের সকলের পক্ষ থেকে দাবি থাকবে যেন এই গাছ কাটা বন্ধ করা হয়।

পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য এর সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, এই গাছগুলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে দুই যুগ ধরে দেখে আসছে। আমরা অভয়ারণ্য এই ক্যাম্পাসে প্রায় সাতশত অধিক গাছ লাগিয়েছি। তাই আজকে আমরা এই প্রতীকী চিত্রাঙ্কন প্রতিবাদ করছি। এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করে চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তুলে ধরছি। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত আমাদের মর্মাহত করেছে।

ইবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত কখনও ক্যাম্পাসের উন্নয়নে আসতে পারে না। এখানে দুইটি একাডেমিক ভবনের মাঝে মঞ্চ বানানোর কোনো মানে হয় না। আমরা আশা করি প্রশাসন আমাদের কথাগুলো শুনে এর একটি সুষ্ঠু সমাধান দিবে।

গাছ রোপণকারী অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুঈদ রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে ধারণ করার জায়গা থেকেই আমি নিজ অর্থায়নে ৫০০ রেইনট্রি গাছ লাগিয়েছিলাম ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে। গাছ গুলো যখন উপড়ে পড়েছে তখন হৃদয় ব্যথিত হয়েছে। তবে আমার হাতে লাগানো হলেও গাছের মালিকানা তো আমার নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। তবে আমার মনে হয় পেছনে গাছ রেখেও মঞ্চ করা যেত।

এদিকে গাছ কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, আমি সবসময় প্রগতিশীল সংস্কৃতি বজায় রাখতে চেষ্টা করে আসছি। উন্নয়ন মূলক কাজ করতে গেলে ছোটো খাটো কিছু বিষয় বাদ দিতে হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলবাদী ধারণা থেকে আমরা বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতেছি। যারা প্রতিবাদ করতেছে তারা শুধু গাছ কাটার জন্য করে না, একটা ইস্যু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক চর্চা নির্মূল করার চেষ্টা করে। এর নেপথ্যে কারা কাজ করতেছে আমাদের ধারণা আছে। যারা ক্ষতি হবে বলে মনে করছে এবং দুই পাশের একাডেমিক ভবনে পড়াশোনার ক্ষতি হবে বলে দাবি করতেছে, তাদেরকে বলছি, ২৪ ঘণ্টা তো চর্চা হয় না। বিশেষ দিবস বা উৎসব উপলক্ষে হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌলশী (ভারপ্রাপ্ত) কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, ওই জায়গায় মঞ্চ করলে গাছ কাটা ছাড়া উপায় ছিল না। ভিসি, প্রো ভিসি, ট্রেজারার, ডিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেই গাছ কাটা হয়েছে। কোনো কাজের প্রয়োজন হলে গাছ কাটা লাগে। এখানে গাছ থাকলেও মঞ্চ করলে শিকড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

জানতে চাইলে, উপাচার্য ছুটিতে থাকায় তাঁর দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এখানে দুইটা গাছ মারা গেয়েছে অলরেডি। এখানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পোগ্রাম হয় তো এখানে ডালপালা পড়ে আঘাতের সম্ভাবনা থাকে। আর আমরা এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহৎ স্বার্থে ডিন, শিক্ষক সমিতি সহ সবার সাথে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীলতার চর্চা বজায় থাকুক এবং আমরা মঞ্চ তৈরির সাথে সাথে আরো ৫০০ বৃক্ষ রোপণ করে দিবো।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর