বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • গরুর দেশীয় জাত হারানোর বিনিময়ে আধুনিক জাত দরকার নাই
  • এনবিআর বিলুপ্তিতে কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই
  • চিকিৎসার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর সরকার
  • ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না
  • ২ জনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর জেল
  • পররাষ্ট্রসচিবসহ ৬ জনের সদস্যপদ স্থগিত করল অফিসার্স ক্লাব
  • চিকিৎসকদের জন্য সুখবর, বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব
  • সারাদেশে এনআইডি সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ
  • সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথমবার নিজ এলাকায় যাচ্ছেন ড. ইউনূস
  • শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ১৭ মে

প্রধানমন্ত্রী

আগুন সন্ত্রাসীদের শাস্তি পেতেই হবে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
৬ মার্চ ২০২৪, ১০:৪১

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কখনও ক্ষমা করা যায় না, তাদের শাস্তি পেতেই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচনে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করেছে বলেও তিনি জানান।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ নির্বাচনের সব চেয়ে লক্ষণীয় হলো অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছে। সব থেকে বড় কথা নারী ভোটারদের উপস্থিতি, প্রথমবার যারা ভোটার হয়েছে সেই তরুণ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। সব থেকে বড় কথা অগ্নিসন্ত্রাস, এই অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আগুন লাগার পর মানুষ মারা গেলে কি ঘটনা হয়, আমরা তো কয়েক দিন আগে, যে অগ্নিকাণ্ড আমরা দেখলাম। এটা তো একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। সব থেকে দূভাগ্যের বিষয় যখন আমাদের দেশে আমরা দেখি রাজনীতির নামে, নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসন্ত্রাস ঘটানো হয়, মানুষ পোড়ানো হয়, মানুষ মারা হয় জাতীয় সম্পদ পুড়িয়ে ফেলা হয়, জীবন্ত মানুষগুলোকে পড়িয়ে ফেলা হয়। কোন মানুষের ভেতরে এতো টুকু মনুষ্যত্ববোধ থাকলে কি এই কাজ করতে পারে। কারো ভেতরে দেশ প্রেম থাকলে এই কাজ করতে পারে। কেন নির্বাচনকে বাধা দেওয়া সেখানে আমার প্রশ্ন। এ দেশে ১৯৭৫ সালের পর যে নির্বাচনগুলো হয়েছে প্রত্যেকটি নির্বাচন তো আমরা দেখেছি, হ্যাঁ, না ভোট অথবা নির্বাচন কমিশনে তালা দিয়ে ভোটের রেজাল্টই নাই। দুই দিন তিন দিন লেগে গেছে নির্বাচনের রেজাল্ট দিতে। এ রকম অনেক কিছু আমরা দেখেছি। আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা দেখালেন, তিনি কিন্তু দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ নির্বাচনের রেজাল্ট দেখালেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন জেনারেল জিয়াউর রহমান কীভাবে করেছিল। তৃতীয় নির্বাচনে আমাদের বিরোধী দলের নেতার ভাইই (এরশাদ) আরেক মিলিটারি ডিকটেটর তখন ক্ষমতায়। এক মিলিটারি ডিকটেটর তো ভোট চুরির রাস্তা দেখিয়ে গেল কীভাবে ক্ষমতার দখলটা দেখিয়ে গেল। আর তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আরেক জন, দুই জনেরই একই লেখা সেনা প্রধান হলেন, এক দিন ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্র প্রধান হয়ে গেলেন। এই সঙ্গে দুই রূপ সেনা প্রধান থেকে রাষ্ট্র প্রধান। সেই রাষ্ট্রপতি পদ নিয়েই ভোট চুরি। তারপরও আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছিলাম। যখন দেখলো ৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতে যাচ্ছে তখন নির্বাচন কমিশনে তালা, ভোটের বক্স উধাও, ভোটের রেজাল্ট উধাও। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পরে রেজাল্ট আসলো। জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রপতি ভোট, হ্যাঁ না ভোট আর সংসদ সদস্য ভোট এটা তো আগে থেকেই সব ভোটতো দেওয়া। আবার দেখলাম ৮৮-তে হলো সে নির্বাচনে কোনো দল অংশ গ্রহণ করেনি। আমি খুশি হতাম বিরোধী দলের নেতা (জি এম কাদের) তার ভাইয়ের (এরশাদ) অনুষ্ঠিত ৮৮ এর নির্বাচনের রেজাল্ট একটু দেখাতো। সে নির্বাচনে ছিল শুভঙ্করের ফাঁকি। ঠিক আবার জেনারেল এরশাদের পদ অনুকরণ করলো খালেদা জিয়া। সেটা কবে ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। অবশ্য তিনি সেটা দেখিয়েছেন ২১ ভাগ ভোট, উনাদের ২১ ভোটই বা কীভাবে হলো। সেদিন তো কোনো ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যায়ই নাই, যেতেই পারে নাই। সে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছিল ১০টা হোন্ডা, ২০টা গোন্ডা নির্বাচন ঠাণ্ডা। এ তো নির্বাচনের চরিত্র ছিল সে নির্বাচনও টেকেনি। এরশাদ সাহেবকেও বিদায় নিতে হয়েছিল, খালেদা জিয়াকেও বিদায় নিতে হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের রুদ্র রোষে, ভোট চুরির অপরাধে। ২০০১ সালের নির্বাচন আওয়ামী লীগ জিতে যাবে, আওয়ামী লীগ যেন কোনোভাবেই জিততে না পারে তার জন্য যত রকমের কারসাজি, কারণ আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হইনি এটাই ছিল অপরাধ। এতো বড় দেশের কথা শুনলাম না, কি অপরাধ করে ফেলেছি। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে তো রাজনীতি করি না। আমার দেশে সম্পদ তো আগে, দেশের সম্পদ দেশের মানুষের জন্য থাকবে। আমি কেন ক্ষমতার লোভে ওদেরও কাছে দেশ বিক্রি করবো। খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গেল, তিনি ক্ষমতায় আসলো। সে নির্বাচনেও যে ঘটনা, আমাদের কাছে সে তথ্য আছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাত্র ৩০ সিট পায় বিএনপি। এর পর থেকেই বিএনপি নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাদের নির্বাচন ঠেকাও মানে অগ্নিসন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষতি করা। দেশের মানুষকে নিয়ে খেলা করা ২০২৩ সালের অক্টোবরে আমরা দেখলাম। এর পর প্রধানমন্ত্রী সংসদে অগ্নিসন্ত্রাসের ভিডিও চিত্র দেখান। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিএনপি-জামায়াত করে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কখনও ক্ষমা করা যায় না, তাদের শাস্তি পেতেই হবে।

তিনি বলেন, আমি জানি বিএনপির তরফ থেকে বিদেশে বার বার বলা হচ্ছে তাদের এতো লোক গ্রেপ্তার। সবই নাকি রাজবন্দি, রাজবন্দি, রাজবন্দি কাকে বলে। যারা এভাবে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে তারা কি রাজবন্দি হয়। তারা তো সন্ত্রাসী, তারা সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী এবং তারা অপরাধী। রাজনৈতিক কারণে তো কেউ গ্রেপ্তার নাই। যারা গ্রেপ্তার আছে, হয় হুকুম দাতা নয় সরাসরি অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত। অথবা অর্থ প্রদানকারি, কাজেই অর্থ প্রদানকারী, হুকুমদাতা অথবা সরাসরি জড়িত কেউ রেহাই পাবে না। সংসদ সদস্যদের বলবো নিজ নিজ এলাকায় যারা এই ধরনের অপরাধ করেছে, যেসব মামলা চলছে এ মামলাগুলো যেন যথাযথভাবে হয়, সাক্ষী সাবুদ যেন হয় এবং শান্তি যেন নিশ্চিত হয়।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর