রবিবার, ১৮ই মে ২০২৫, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এডিপির আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা 
  • ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযানে ১৫৬৬ জন গ্রেফতার
  • উপদেষ্টা আসিফকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
  • অবৈধ ভারতীয়দের নিয়ম মেনে ফেরত পাঠাবে বাংলাদেশ
  • এমআরএ ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • সরকার নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
  • আছিয়া ধর্ষণ-হত্যা মামলায় হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড
  • সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে শিগগিরই
  • নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক পুলিশ
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে পুর্নবাসন অধ্যাদেশ

কলমাকান্দার ৪২ গ্রাম প্লাবিত, দুর্ভোগে মানুষ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
২০ জুন ২০২৪, ১৫:৩৯

তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার বেশ কিছু নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। (১৯ জুন) বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে নতুন নিচু এলাকা প্লাবিত হতে থাকে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৪২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গ্রামের রাস্তা, পুকুর, ঘরবাড়ি ও বিদ্যালয় প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

আজ দুপুর ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় উপজেলার বড় নদী উব্দাখালীর পানি বেড়ে কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের বেনুয়া, খলা, চারালকোনা, সনুড়া, সাকুয়া ইন্দ্রপুরসহ বেশ কিছু গ্রামে নতুন করে পানি ঢুকেছে। নিচু এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে এলাকার মানুষ কিছুটা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তবে এখনো থাকার ঘরে পানি ঢোকেনি।

কলমাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, বাহাদুরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইজপাড়া, খলা-১, খলা-২, বড়খাপন, চৌহাট্টা, বাউসারি, হাইলাটি, রিকা, পোগলা, ভাটিপাড়াসহ অর্ধশতাধিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে বলে জানতে পরেছেন।


নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ৪৮ ঘণ্টায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও জারিয়া ঝাঞ্জাইল রেলস্টেশন এলাকায় ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এতে নেত্রকোনা জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ৪২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। (১৯ জুন) বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে নতুন করে আরও বেশ কিছু এলাকা পানি ঢুকে। পোগলা ইউনিয়নের কালাকোনা, জীবনপুর, গোয়াতলা, কৈলাটি, মঙ্গলসিধ, কৈলাটি ইউনিয়নের খলা, চারালকোনা, বাবনীকোনা, সনুরা, কনুরা, সাকুয়া ইন্দ্রপুর, নাজিরপুর ইউনিয়নের গনিয়ারগাঁও, পাঁচকাঠা, গান্ধারকান্দা, বেনুয়া, কলমাকান্দা সদরের শোলজান, সাউথপাড়া, মনতলা, ইসবপুরসহ বিভিন্ন এলাকা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পালপাড়া-সিধলী, কালিহালা-বিশরপাশা, কলমাকান্দা-মনতলা, পাগলা-ঘনিচাসহ বেশ কিছু গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার মাঠ প্লাবিত হয়েছে। অনেকের পুকুরে পানি ঢুকে মাছ বেরিয়ে গেছে। সাতটি পরিবার বিশরপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।

 

পাউবোর নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কংস, সোমেশ্বরী, ধনুসহ অন্য বড় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে সুরমা, জাদুকাটা, সারি, গোয়াইন, সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নেত্রকোনার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় কলমাকান্দায় কাঁচা-পাকা মিলিয়ে ৬৭৮ কিলোমিটার সড়ক আছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, এরই মধ্যে উপজেলা মোড়-মুক্তিরচর, বাহাদুরকান্দা-বাসাউড়া, ঘোষপাড়া-হরিণধারা, কলমাকান্দা-বিশরপাশা পাকা রাস্তা, গোরস্তান-সাউদপাড়া, গজারমারী-খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদ, গোবিন্দপুর-রানীগাঁও কাঁচা রাস্তার বিভিন্ন স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। অবশ্য এসব রাস্তা অনেকটা নিচু।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, বন্যার পানিতে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বরাদ্দ পেয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হচ্ছে।

বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরি, মদন, মোহনগঞ্জ ও বারহাট্টা উপজেলায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর