শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে শিগগিরই
  • নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক পুলিশ
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে পুর্নবাসন অধ্যাদেশ
  • গত ৯ মাসে কোনো সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করেনি সরকার
  • প্রবাসীদের ভোটার হতে দিতে হবে চার তথ্য
  • ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২০০১ মামলা
  • ১২ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারণ আজ
  • ভয়াবহ বায়ুদূষণে পঞ্চম ঢাকা
  • রাত ৮টার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে
  • ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে সড়কে অবস্থান

ছোট গল্প

একমুঠো ভোর

মাহমুদ হাফিজ

প্রকাশিত:
১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৩৫

তখন ভোর হয়েছে মাত্র। শীতের ভোর।কুয়াশার আস্তরণ ছড়ানো চারিদিকে। খসে খসে পড়ছে কুয়াশা।শব্দ হচ্ছে টিপ টিপ।আশপাশে কোনো সাড়া নেই এ শব্দ ছাড়া।ঘাপটি পড়া নিরবতা সর্বত্র। আযানের সুর শোনা যাচ্ছে কোথাও কোথাও।খোয়ারবন্দি মোরগের ডাকও ভেসে আসছে পরপর।ভোরের নিরবতা বিলিন করে দিচ্ছে মুয়াজ্জিনের এ সুর ও মোরগের ডাক।কুয়াশামাখা পথ থেকে চলার শব্দ আসতে লাগলো কিছুক্ষণ পর।

কুয়াশামাখা এ পথটা বয়ে গেছে তেমাথা পর্যন্ত। তিন দিকে মোড় নিয়েছে পথটা তেমাথা থেকে।একটা মোড় পূবে। পশ্চিমে বাকি দুটো।একটু সরু পুবের মোড়টা।দুপাশে ক্ষেত।বিস্তীর্ণ মাঠের মতন দেখতে ক্ষেতদুটো।শেষ মাথা দিগন্তে ছুঁয়েছে যেন, যে দিগন্তে সূর্য জন্মায় প্রতিদিন।

সরু এ পথটা ধরে হাঁটছি একা।ঠান্ডা বাতাস চারিদিকে। পাতলা একটা জামা গায়।বাতাসে হীম হয়ে আসছে গা।ইচ্ছে করছে বাড়ি ফিরতে।সেটা আর হলো না। দুপাশের ক্ষেত মাড়িয়ে চলার অদম্য ইচ্ছে জেঁকে বসলো হঠাৎ। যেই ভাবা সেই কাজ। রাস্তা থেকে ক্ষেতে নামলাম হন্তদন্ত করে।হাঁটতে লাগলাম কাঁপতে কাঁপতে। ক্ষেতে বাতাস বইছে হুড়হুড়িয়ে।আমায় জড়িয়ে নিচ্ছে সে বাতাস।ঠাণ্ডায় বাঁকা হয়ে যাচ্ছি একদিকে।চোয়ালদ্বয় অনঢ় প্রায়।এই বুঝি হারিয়ে ফেলবো বাকশক্তি।দুমিনিট হেঁটে ভাবলাম ফিরে যাব এখন।গরম পোশাক পরে অন্যদিন হাঁটবো।পুরো ক্ষেত দেখবো।

দৌড়ের মতন হাঁটা দিলাম পথের দিকে।অদূরে কুয়াশার কারণে অস্পষ্ট একজন লোকের ওপর দৃষ্টি পড়লো হটাৎ। আমি থমকে দাঁড়ালাম।কৌতুহল জন্মালো লোকটাকে ঘিরে।ছোট ছোট পায়ে হাঁটতে লাগলাম লোকটার দিকে।দৃষ্টির আঘাতে কুয়াশার প্রতাপ সরিয়ে এগোতে লাগলাম সামনে।আরেকটু এগোলে দৃশ্যায়ত হলো লোকটা।সে দাঁড়ানো নয় এখন।একবার সামনে তারপর পেছনে হাঁটছে।বড়সড় একটা গামলা হাতে তার।ডান হাতটা গামলায় ঢুকিয়ে আবার বের করে নিচ্ছে।কী যেন ছিঁটাচ্ছে ক্ষেতে। এটা দেখে অভিপ্রায়ী হলাম আরো।লোকটার কাছে যেতে আরেকটু দ্রুত হাঁটলাম।

লোকটা নিথর দাঁড়িয়ে আমাকে দেখে।কাছে ভিড়লাম তার।লোকটার গা উদোম। শীত, একই সাথে বাতাস — এযেন স্বাভাবিক তার জন্য।সংকোচ ঠেলে জিগালাম—
" চাচা! শীত লাগে না!"

পান চিবানো মুখ খুলে চাচা বলল— " যারা কৃষক, তাদের শীত- গরম একই"

নিস্তব্ধ আমি।অবলোকন করলাম তাকে বেশখানিক সময়।তার কৃষকমনকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছিলো ভীষণ। সময় ছিলো না কৃষক চাচার।ক্ষেতে সর্ষে বুনবেন তিনি, এজন্য ব্যস্ত!

ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সূর্য তখন রোজকার মতন জন্ম নিয়েছে দিগন্তের কোলে!


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর